শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৫

Radhakrishna Temple, Ula Birnagar, Nadia

           

  কৃষ্ণচন্দ্র  রায়  দেব  মন্দির, উলা  বীরনগর, নদিয়া

                                   শ্যামল  কুমার  ঘোষ

            শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর  রেলপথে  বীরনগর  একটি  স্টেশন।  কলকাতা  থেকে  রেলপথে  দূরত্ব  ৮১.৬  কিমি।  বীরনগর  স্টেশন  থেকে  ২  কিমি  পূর্ব  দিকে  উলার  মুস্থাফি  পাড়া।  এই  পাড়ার  মিত্র  মুস্থাফিদের  রাধাকৃষ্ণের  জোড়বাংলা  মন্দিরটি   বিখ্যাত।  মন্দিরটি  টেরাকোটা  অলংকরণে  অলংকৃত।

            বীরনগরের  প্রাচীন  নাম  উলা।  উলা  নামকরণ  সম্পর্কে  নানান  লোকশ্রুতি  প্রচলিত  আছে।  উলুবন  পরিষ্কার  করে  প্রথম  বসতি  স্থাপিত  হয়  বলে  নাম  হয়  উলা।  আবার  অনেকে  বলেন  এই  গ্রামের  প্রাচীন  ও  বিখ্যাত  দেবতা  উলাই  চণ্ডীর  নামানুসারে  নাম  হয়  উলা।  এখানে  একসময়  গ্রামবাসীদের  চেষ্টায়  এক  দুর্ধর্ষ  ডাকাতদল  ধরা  পড়লে  ইংরেজ  সরকার  উলার  নতুন  নামকরণ  করেন  বীরনগর  অর্থাৎ  বীরদের  নগর। 

            উলার  প্রাচীন  জমিদার  মুস্তৌফি  বংশের  প্রতিষ্ঠাতা  রামেশ্বর  মিত্র  মুর্শিদকুলী  খাঁর  রাজত্বকালে  বাংলার  মুস্তৌফি (= নায়েব  কানুনগো ) পদে  নিযুক্ত  হন।  তিনি  ১৬১৬  শকাব্দে  (   ১৬৯৪  খ্রীষ্টাব্দে )  মুস্তাফি  পাড়ায়  তাঁর  বসতবাড়ির  কাছে  রাধাকৃষ্ণের  একটি  সুন্দর  জোড়বাংলা  মন্দির  নির্মাণ  করেন।  দুটি  'দোচালা'  বা  'একবাংলা'  জোড়া  দিয়ে  এ  ধরণের  মন্দির  তৈরি  হয়  বলে  এই  স্থাপত্যশৈলীর  নাম  'জোড়বাংলা'।  মন্দিরটির  সামনের  দিকে  পোড়ামাটির  প্রতিষ্ঠা-ফলকের  পাঠ  হল  :

              অঙ্গৈককালেন্দুমিতে 
              শকাব্দে  ১৬১৬  কায়স্থ
              কায়স্থহবেষ  ধর্ম্মঃ। 
              যো  নির্ম্মমে  শ্রীহরিযুগ্ম ধাম  
              শ্রীযুত  রামেশ্বরমিত্রদাস। 

              অর্থাৎ  ১৬১৬  শকাব্দে ( ১৬৯৪ খ্রীষ্টাব্দে )  কায়স্থকুলোদ্ভব   শ্রী  রামেশ্বর  মিত্র  শ্রীহরির  এই  যুগ্মগৃহ  নির্মাণ  করলেন।  এখানে  'অঙ্গ' = ছয়,   'এক' = এক,  'কাল' = ছয়,  'ইন্দু' = এক  ধরে  অঙ্কের  বামাগতি  নিয়মানুসারে  ১৬১৬  শকাব্দ  হয়েছে।  মন্দিরে  রাধাকৃষ্ণ  বিগ্রহ  নিত্যপূজিত।  মন্দিরের  কৃষ্ণ  বিগ্রহটি  রামেশ্বর  মিত্র  প্রতিষ্ঠিত। রাধিকা  মূর্তিটি  কোন  এক  সময়ে  চুরি  গেলে  পুনরায়  অন্য  মূর্তি  প্রতিষ্ঠা  করা  হয়।

            ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত,  পশ্চিমমুখী  এই  মন্দিরের  দৈর্ঘ্য,  প্রস্থ  ও  উচ্চতা  যথাক্রমে  ৬.৭  মি. ,  ৬.৭  মি. এবং  ৭.৬ মি.।  প্রতিটি  দোচালার  প্রস্থ  ৩.৩ মি.। প্রথম  দোচালাটি  অলিন্দ  এবং  দ্বিতীয়  দোচালাটি  গর্ভগৃহ  হিসাবে  ব্যবহৃত  হয়। উৎকৃষ্ট  টেরাকোটা  অলংকারে  মন্দিরটি  অলংকৃত।  পাদপীঠ  সংলগ্ন  দেওয়াল  থেকে  আরম্ভ  করে  সামনের  দিকের  প্রায়  সর্বত্রই  পোড়ামাটির  অলংকরণ  দেখা যায়।  কারিগরি  নৈপুণ্যে  সেগুলি  নদিয়া  জেলার  টেরাকোটা  মন্দিরগুলির  মধ্যে  শ্রেষ্ঠ  নিদর্শনের  তুল্য  হলেও  অপটু  হাতের  সংস্কারে  ও  রঙের  প্রলেপে  তা  এখন  অনেকটাই  ম্লান।  বাইরের  দেওয়ালে,  ভিত্তিবেদি-সংলগ্ন  দুটি  অনুভূমিক  সারির  নিচের  সারিতে  টেরাকোটায়  পালকিবাহিত  বাবু  ও  রক্ষকগণ,  নৌকাভ্রমণ,  মুঘল  যোদ্ধা,  বানিজ্যতরী,  মৃগয়া  প্রভৃতি  সামাজিক  চিত্র  ও  উপরের  সারিতে  একটানা  হংসশ্রেণী  উৎকীর্ণ  আছে।  বাইরের  ত্রিখিলান  প্রবেশপথের  তিনদিক  ঘিরে  কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  এক  সারি  মূর্তি-ভাস্কর্যের  মধ্যে  কৃষ্ণলীলা,  রাম,  লক্ষ্মণ,  ভরত,  শত্রুঘ্ন  ও  শিবদূর্গা  প্রভৃতি  পৌরাণিক  দেবদেবীই  প্রধান।  বাঁ  দিকের  স্তম্ভের  গায়ে  কার্তিক-গনেশসহ  মহিষমর্দিণী  মূর্তিটি  সুন্দর।  দেওয়ালের  বাকি  অংশে  ফুলকারি  নকশা  দ্বারা  অলংকৃত।  গর্ভগৃহে  ( দ্বিতীয়  দোচালা )  প্রবেশপথের  উপরেও  টেরাকোটার  কিছু  কাজ  আছে।  সেখানে,  খিলানশীর্ষের  দুপাশে  দুটি  লম্ফমান  সিংহ  দৃষ্টি-আকর্ষণী। 

            মিত্র  মুস্তাফিদের  কাঠের  তৈরি  কারুকার্যশোভিত  একটি  দুর্গামণ্ডপ  ছিল।  শোনা  যায়  সেই  সময়  এই  দুর্গামণ্ডপটি  দেখার  জন্য  বাংলার  বিভিন্ন  স্থান  থেকে  অনেক  লোক  এখানে  হাজির  হত।  অনেক  দিন  হল  সেটি  একপ্রকার  বিনষ্ট।  শুধু  কাঠের  ওপর  খোদাই  করা  কয়েকটি  থাম  বা  কড়ি  ইঁটের  তৈরি  নতুন  দুর্গামণ্ডপে  রাখা  আছে।  কীটপতঙ্গের অত্যাচারে  সেগুলিও  এখন  জীর্ণ-দীর্ণ।
                        
            উপরোক্ত  মন্দিরে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  লালগোলা  প্যাসেঞ্জার  বা  কৃষ্ণনগর  লোকালে  উঠুন।  নামুন  বীরনগর  স্টেশনে।  স্টেশনের  পূর্ব  দিক  থেকে  টোটো  বা  রিকশায়  উঠে  পৌঁছে  যান  মন্দিরে।



জোড়বাংলা  মন্দির, উলা  বীরনগর

মন্দিরের  সামনের  ত্রিখিলান  প্রবেশপথ 

মাঝের  খিলানের  উপরের  কাজ

মন্দিরের  প্রতিষ্ঠা-ফলক

ভিত্তিবেদি-সংলগ্ন  টেরাকোটার  কাজ - ১

ভিত্তিবেদি-সংলগ্ন  টেরাকোটার  কাজ - ২

ভিত্তিবেদি-সংলগ্ন  টেরাকোটার  কাজ - ৩

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  ও  আশেপাশের  টেরাকোটার  কাজ - ১

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  ও  আশেপাশের  টেরাকোটার  কাজ - ২

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  ও  আশেপাশের  টেরাকোটার  কাজ - ৩

মন্দিরের  শিখরদেশ

গর্ভগৃহের  সামনের  খিলানের  উপরের  কাজ

মন্দিরের  বিগ্রহ - ১

মন্দিরের  বিগ্রহ - ২

বিনষ্ট  দুর্গামণ্ডপের  কাঠের  উপর  কারুকার্যের  নমুনা



            মন্দিরটি  পরিদর্শনের  তারিখ : ০৩.১১.২০১৫

সহায়ক  গ্রন্থাবলি  :

   ১. বাংলার  মন্দির  স্থাপত্য  ও  ভাস্কর্য  :  প্রণব  রায় 
   ২.  নদিয়া  জেলার  পুরাকীর্তি :  মোহিত  রায়  (তথ্য-সংকলন  ও  গ্রন্থনা )

             -------------------------------------------
            আমার  ইমেল :  shyamalfpb@gmail.com   প্রয়োজনে  যোগাযোগ  করতে  পারেন।

           --------------------------------------------         
                                                  

বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৫

Krishnaray Jiu Temple, Tehatta, Nadia


শ্রী শ্রী  কৃষ্ণরায়  জিউ  মন্দির, তেহট্ট, নদিয়া

 শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

            শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর  রেলপথে  কৃষ্ণনগর  শেষ  স্টেশন। কলকাতা  থেকে  দূরত্ব  ৯৯ কিমি। কৃষ্ণনগর  থেকে  ৪৪  কিমি  উত্তরে  তেহট্ট।  তেহট্টের  প্রাচীন  নাম  ত্রিহট্ট। এক  সময়ে  এই  অঞ্চলের  তিনটি  স্থানে  সপ্তাহে  দুদিন  করে  হাট  বসত।  পরে  জনসাধারণের  সুবিধার্থে  জলঙ্গী  নদীর  পূর্ব  তীরে  এক  প্রশস্ত  জায়গায়  তিনটি  হাট  একত্র  হয়ে  বসতে  আরম্ভ  করে।  স্থানটির  নাম  হয়  তেহাটা  বা  ত্রিহট্ট।  পরে  নাম  হয়  তেহট্ট।

            তেহট্টের  ঠাকুরপাড়ায়  কৃষ্ণরায়ের  'জোড়বাংলা'   টেরাকোটা  মন্দিরটি  উল্লেখযোগ্য।  দুটি  'দোচালা'  বা  'একবাংলা'  জোড়া  দিয়ে  এ  ধরণের  মন্দির  তৈরি  হয়  বলে  এই  স্থাপত্য  শৈলীর  নাম  'জোড়বাংলা'।  মন্দিরটি  ১৬০০  শকাব্দে  বা  ১৬৭৮  খ্রীষ্টাব্দে  নির্মিত।  মন্দিরটির  দক্ষিণ  দিকের  দেওয়ালে  পোড়ামাটির  হরফে  উৎকীর্ণ  প্রতিষ্ঠা-ফলকের  পাঠ  হল 

   ১৬০০  শাকে  শূন্যনভঃষড়িন্দুগণিতে  মেষগতে  ভাস্করে 
   শ্রীগোবিন্দপদারবিন্দনিরতঃ  শ্রীরামদেব  মহান 
   লক্ষ্মী যস্য  পদারবিন্দসেবনবিধৌ  ব্যাপারসম্পাদিনী 
   তস্য  শ্রীপুরুষোত্তমস্য  চ  গৃহং  যত্নৈরকার্ষীত্ স্বয়ং ।। 

            অর্থাৎ  ১৬০০  শকাব্দের  ( ১৬৭৮  খ্রীষ্টাব্দের )  বৈশাখ  মাসে  শ্রীগোবিন্দের  পাদপদ্মসেবী  মহান  পুরুষ  রামদেব  যত্নের  সঙ্গে  শ্রীপুরুষোত্তমের  এ  মন্দির  নির্মাণ  করেছিলেন। লক্ষ্মীদেবী   তাঁর  পদসেবা  করতেন  এবং  তাঁর  উপাসনার  জন্য  রামদেব  এই  মন্দির  নির্মাণ  করেন।  এখানে  শূন্য = ০ , নভ = ০ , ষড় = ৬  এবং  ইন্দু = ১  ধরে  অঙ্কের  বামাগতি  নিয়মানুসারে  প্রতিষ্ঠাকাল  ১৬০০  শকাব্দ।  জানা  যায়  যে  এই  লক্ষ্মীদেবী  রামদেবের  বিধবা  কন্যা  ( মতান্তরে  শিষ্যা ) ছিলেন।

            এক  সময়ে  এই  মন্দির  ও  বিগ্রহ  নদিয়া  রাজবংশের  অধীন  ছিল।  নদিয়া  রাজবংশ  কর্তৃক  প্রদত্ত  দেবোত্তর  সম্পত্তির  আয়  খেকে  বিগ্রহের  নিত্যপূজা  ও  পার্বণাদি  অনুষ্ঠিত  হত।  তাই  আগে  বারদোলের  মেলায়  এই  বিগ্রহ  কৃষ্ণনগরে  নিয়ে  যাওয়া  হত। তবে  অনেক  দিন  হল  বিগ্রহ  আর  কৃষ্ণনগরে  পাঠানো  হয়  না।

            ইঁটের  তৈরী  মন্দিরটি  পশ্চিমমুখী।  উল্লেখ্য,  মন্দিরের  পশিম  দিকে  রাস্তা।   সামনের  দোচালাটির  দেওয়াল  পলেস্তারা  আবৃত।  শোনা  যায়,  আগে  সামনের  দেওয়াল  টেরাকোটা  অলংকারে  অলংকৃত  ছিল।  বর্তমানে  পিছনের  দোচালাটির ( গর্ভগৃহের )  প্রবেশপথের  সামনের  দেওয়ালে  পোড়ামাটির  অলংকরণ  দেখা  যায়।  তবে  রঙের  প্রলেপে  তা  অনেকটাই  ম্লান।  টেরাকোটাগুলির  মধ্যে  উল্লেখ্য  চারটি  মূর্তির  দুটি  চতুর্ভুজ  শ্রীকৃষ্ণ  এবং  অপর  দুটি  রাজ  কর্মচারী  বা  রাজার।  এই  চারটি  মূর্তি  দুটি  দুটি  করে  প্রবেশ-পথের  দুদিকের  দেওয়ালের  নিচের  দিকে অবস্থিত।  এ  ছাড়া  মেঝের  ঠিক  উপরের  দেওয়ালে  হংসশ্রেণী।  খিলানের  চতুর্দিকে  সাতটি  করে  দুপাশে  চোদ্দটি  প্রতীক  আটচালা  শিবালয়  ও  তার  মধ্যে  শিবলিঙ্গ। পোড়ামাটির  কয়েকটি  ফুল  ও  অন্যান্য  নকশাও  দেখা  যায়।  মন্দিরে  কষ্টিপাথরের  কৃষ্ণরায়  নিত্য  পূজিত।  এখানে  কৃষ্ণ  বিগ্রহ  একক।  কোন  রাধিকা  মূর্তি  নেই।  এ  সম্পর্কে  শ্রী  কুমুদনাথ  মল্লিকের  'নদিয়া  কাহিনী'  গ্রন্থে  পাই,  " কথিত  আছে  কোনও  সময়ে  ঠাকুরাণীর  গাত্র  হইতে  যবন  জাতীয়  চৌরে  অলঙ্কার  অপহরণ  করিলে  পূজারি তাঁহাকে  মন্দির  সন্নিহিত  দীর্ঘিকায়  বিসর্জ্জন  দেন,  তদবধি  ঠাকুরের  অদৃষ্টে  আর  দেবী  মিলে  নাই।" 

            মন্দিরের  সামনে  একটি  নবনির্মিত  নাটমন্দির  আছে।  মন্দিরের  ও  নাটমন্দিরের  মেঝে  শ্বেতপাথর  দিয়ে  তৈরি।  মন্দিরের  কিছু  দূরে  চাতর  বাজারের  কাছে  একটি  নবনির্মিত  দোলমঞ্চে ( পুরানোটি  বিনষ্ট  ) দোলের  সময়  বিগ্রহ  রেখে  দোল   উৎসব  পালন  করা  হয়।  এ  ছাড়া  ঝুলন, রথযাত্রা, জন্মাষ্টমী, রাখি,  স্নানযাত্রা  ও  মাঘী  পূর্ণিমায়  উৎসব  অনুষ্ঠিত  হয়।  মাঘী  পূর্ণিমার  উৎসবটি  জাঁকজমক  সহকারে  পালন  করা  হয়। 

            তেহট্টের  কৃষ্ণরায়  মন্দিরে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  লালগোলা  প্যাসেঞ্জার  বা  কৃষ্ণনগর  লোকালে  উঠুন।  নামুন  কৃষ্ণনগরে।  স্টেশন  থেকে  রিকশায়  বা  টোটোতে  বাসস্ট্যান্ড।  বাসস্ট্যান্ড  থেকে  শিকারপুর, করিমপুর  বা  পাটিকাবাড়ি  গামী  বাসে  উঠুন।  নামুন  তেহট্টের  P.W.D.   মোড়ে।  সেখান  থেকে  টোটোতে  হাসপাতাল  রোড  ধরে   মন্দির।  কলকাতা  থেকে  বাসে  বা  গাড়িতেও  যেতে  পারেন।  দুপুরে  ১২ টা  থেকে  ৪ টে  পর্যন্ত  মন্দির  বন্ধ  থাকে। 

            মন্দিরটি  পরিদর্শনের  তারিখ :  ০৯.১১.২০১৫

মন্দিরের  ফটক

নাটমন্দির  ও  মন্দির

নাটমন্দির ( আংশিক ) ও  মন্দির

মন্দির  ( দক্ষিণ  দিক  থেকে  )

মন্দির ( সামনের  দিক  থেকে )

মন্দির (নাটমন্দির  থেকে )

মন্দিরের  প্রতিষ্ঠাফলক

গর্ভগৃহের  সামনের  দেওয়ালের  টেরাকোটার  কাজ 

চতুর্ভুজ  শ্রীকৃষ্ণ, রাজ  কর্মচারী  বা রাজা  ও অন্যান্য  টেরাকোটার চিত্র

টেরাকোটার  নকশা

বাতিদান 

কৃষ্ণরায়  জিউ  - ১

কৃষ্ণরায়  জিউ  - ২

দোলমঞ্চ 

 সহায়ক  গ্রন্থাবলি  :
        ১.  বাংলার  মন্দির  স্থাপত্য  ও  ভাস্কর্য  :  প্রণব  রায় 
        ২.  নদিয়া  জেলার  পুরাকীর্তি মোহিত  রায়  (তথ্য-সংকলন  ও  গ্রন্থনা )
       ৩.  পশ্চিমবঙ্গের  পূজা-পার্বণ  ও  মেলা ( ২য়  খণ্ড ) :  অশোক  মিত্র  ( সম্পাদক )                      
                -------------------------------------------
            আমার  ইমেল :  shyamalfpb@gmail.com   প্রয়োজনে  যোগাযোগ  করতে  পারেন।

           --------------------------------------------         

বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৫

Harihar Temple, Gangabas, Amghata, Nadia

  

হরিহর  মন্দির,  গঙ্গাবাস,  আমঘাটা,  নদিয়া

    শ্যামল  কুমার  ঘোষ

            শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর  রেলপথে  কৃষ্ণনগর  শেষ  স্টেশন।  কলকাতা  থেকে  দূরত্ব  ৯৯ কি মি।  কৃষ্ণনগর  থেকে  ৮  কিমি  দূরে  আমঘাটা  ( এখানে  ওই  নামে  পূর্বের  কৃষ্ণনগর-নবদ্বীপঘাট  ন্যারো  গেজ  রেলপথের  একটি  স্টেশন  আছে।  বর্তমানে  রেলপথটি  ব্রড  গেজে  পরিবর্তনের  কাজ  চলছে )। আমঘাটা  স্টেশনের  ১  কি মি  দূরে  গঙ্গাবাস  গ্রাম।  এই  গ্রামের  পাশ  দিয়ে  অলকানন্দা  নদী  প্রবাহিত।  অলকানন্দা  জলঙ্গীর  শাখা  নদী  হয়ে  ভাগীরথীতে  মিশেছে।  তাই  অলকানন্দায়  প্রবাহিত  জল  গঙ্গারই  পবিত্র  জল  এই  জ্ঞানে  কৃষ্ণনগরের  মহারাজা  কৃষ্ণচন্দ্র  প্রবীণ  বয়সে  জ্যেষ্ঠ  পুত্র  শিবচন্দ্রকে  নিজ  জমিদারির  ভার  অর্পণ  করে  গঙ্গা-বাসের  জন্য  এখানে  একটি  প্রাসাদ  নির্মাণ  করেন  এবং  জায়গাটির  নাম  দেন  গঙ্গাবাস।  সেই  সময়  পৌষসংক্রান্তি,  বারুণী  ও  দশহরা  উপলক্ষ্য  পুণ্যস্নানের  জন্য  এখানে  বহু  লোকের  সমাগম  হত।  অবশ্য  কৃষ্ণচন্দ্র  নির্মিত  সেই  প্রাসাদের  কোন  চিহ্ন  এখন  আর  নেই।  আর  স্রোতস্বিনী  অলকানন্দাও  এখন  রুদ্ধ।  এখানেই  তিনি  বাংলা  ১১৮৯  সনের  ২২ শে  আষাঢ়  ( ১৭৮২  খ্রীষ্টাব্দে )  ৭৩  বৎসর  বয়সে  পরলোকগমন  করেন।  এই  নদী  তীরে  কৃষ্ণচন্দ্র  ১৬৯৮ শকাব্দে  ( ১৭৭৬  খ্রীষ্টাব্দে )  ইঁটের  তৈরি  হরিহরের  মন্দির  নির্মাণ  করেন।  মন্দিরটির  গড়ন  অভিনব।  একটি  সমতল  ছাদ  দালানের  উপর  দুটি  পিরামিড  আকৃতির  চারচালা  শিখর।  দক্ষিণমুখী  মন্দিরে  হরিহরের   চতুর্ভুজ  প্রস্তরবিগ্রহ ( একই  বিগ্রহে  হরি  ও  হর  প্রকাশিত )  প্রতিষ্ঠিত।  মূর্তিটির   এক  হাতে   চক্র ও  অন্য  হাতে  ত্রিশূল।  কৃষ্ণচন্দ্র  হরি  ও  হরের  অভেদ  রূপ  প্রতিপাদনের  জন্য  এই  বিগ্রহ  প্রতিষ্ঠা  করেন।  মন্দিরের  দক্ষিণ  দিকে  মাটি-সংলগ্ন  পাদপিঠে  লাগানো  প্রস্তরফলকের  লিপি  নিম্নরূপ 

   গঙ্গাবাসে বিধিশ্রুত্যনুগতসুকৃতক্ষৌণিপালে শক্যেম্মিন্ 

   শ্রীযুক্তো বাজপেয়ী ভুবি বিদিত মহারাজরাজেন্দ্রদেবঃ  
   ভেত্তুং ভ্রান্তিং মুরারিত্রিপুরহরভিদামজ্ঞাতাং পামরাণাং
   অদ্বৈতং ব্রহ্মরূপং হরিহরমুময়া স্থাপয়োল্লনয়া চ ।। 

            শ্লোকটির  ভাবার্থ  এই,  ' যে  অজ্ঞ  শিব  ও  বিষ্ণুকে  পৃথক  পৃথক  মনে  করে  পরস্পরকে  বিদ্বেষ  করে,  তাদের  ভ্রান্তি  দূর  করার  জন্য  ভুবনবিখ্যাত  বাজপেয়ী  মহারাজেন্দ্রদেব  ( মহারাজা  কৃষ্ণচন্দ্র ) ১৬৯৮ শকে  গঙ্গাবাসে  এই  মন্দির  ও  হরিহরের ব্রহ্মরূপ  অদ্বৈতমূর্তি  লক্ষ্মী  ও  উমার  সঙ্গে  স্থাপন  করলেন।  এখানে  'বিধিশ্রুত্যনুগত' = ৮,  'সুকৃত' = ৯,  'ক্ষৌণিপাল'  ( চাঁদের  ষোল  কলা ) = ১৬  এই  অর্থ  ধরে  অঙ্কের  বামাগতি   নিয়মানুসারে  প্রতিষ্ঠাকাল  দাঁড়ায়  ১৬৯৮  শকাব্দ।  ১৯৯৯  সালে  ভক্তিবেদান্ত  স্বামী  চ্যারিটি  ট্রাস্টের  উদ্যোগে  মন্দিরটির  সংস্কার  করা  হয়। 


            শোনা  যায়  যে  কৃষ্ণচন্দ্র  বিপুল  অর্থব্যয়  ও  পরিশ্রমে  চিত্রকুট  পর্বত  থেকে  শ্রীরামচন্দ্রের  প্রস্তর-পদচিহ্ন  এনে  এখানে  প্রতিষ্ঠা  করেছিলেন।  সেটি  এখনও  এখানে  আছে।  অনেকে  এটিকে  মহাবিষ্ণু  গদাধরের  পাদপদ্ম  বলে  থাকেন।  


            হরিহর  ছাড়াও  কৃষ্ণচন্দ্র  এখানে  অন্যান্য  দেবদেবীর  মূর্তিও  প্রতিষ্ঠা  করেন।  অন্নপূর্ণা   ও  মহালক্ষ্মী  মূর্তি  দুটি  আগে  অষ্টধাতুর  ছিল।  সেগুলি  চুরি  যাওয়ায়  মাটির  মূর্তি  প্রতিষ্ঠা  করা  হয়।  এ  ছাড়া  শীতলা,  বালগোপাল,  জগন্নাথ   ও  শিবলিঙ্গ  আছে।   হরিহরের  মন্দিরের  পূর্ব  দিকে  আর  একটি  মন্দির  আছে।  এটি  কালভৈরবের  মন্দির  নামে  পরিচিত।  কালভৈরবের প্রস্তর  মূর্তি  চতুর্ভুজ।  পিছনে  কুকুর।   এই  মন্দিরে  হনুমান  ও   গণেশের  মূর্তিও  আছে।  হরিহরসহ  সকল  বিগ্রহ  এখানে  নিত্য  পূজিত।


            গঙ্গাবাসে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  লালগোলা  প্যাসেঞ্জার  বা  কৃষ্ণনগর  লোকালে  উঠুন।  নামুন  কৃষ্ণনগরে।  স্টেশন  থেকে  নবদ্বীপঘাট  গামী  অটোতে  উঠে  পৌঁছে  যান  আমঘাটা।  কৃষ্ণনগর  বাসস্ট্যাণ্ড  থেকে  বাসেও  যেতে  পারেন।  আমঘাটা  স্টেশনের  পাশ  থেকে  ভ্যান  রিকশায়  উঠে  পৌঁছে  যান  গঙ্গাবাসের  মন্দিরে।  মন্দির  দেখে  গ্রামটি  ঘুরে  দেখতে  পারেন।  আমঘাটার  দুটো  স্টপেজ  আগে  সুবর্ণবিহার।  হরিহরের  মন্দির  দর্শন  করে  ওখানকার  রাধাকৃষ্ণের  মন্দিরও  দর্শন  করে  নিতে  পারেন।

            মন্দিরটি  পরিদর্শনের  তারিখ :  ২০.১১.২০১৫ 

হরিহর  মন্দির,  গঙ্গাবাস 

মন্দিরের  শিখরদেশ

প্রতিষ্ঠাফলক

হরিহর  ও  অন্যান্য  বিগ্রহ

হরিহর  বিগ্রহ

কালভৈরবের  মন্দির

হনুমান, গণেশ  ও  কালভৈরব  বিগ্রহ 

অলকানন্দা  নদী 

সহায়ক  গ্রন্থাবলি  :  
              ১. নদীয়া-কাহিনী  :  কুমুদনাথ  মল্লিক 
              ২. নদিয়া  জেলার  পুরাকীর্তি  :  মোহিত  রায়  ( তথ্য-সংকলন  ও  গ্রন্থনা )
              ৩. বাংলার  মন্দির  স্থাপত্য  ও  ভাস্কর্য  :  প্রণব  রায় 
              ৪. Nadia Gazetteer - Chapter XVI 

           -------------------------------------------

            আমার  ইমেল :  shyamalfpb@gmail.com   প্রয়োজনে  যোগাযোগ  করতে  পারেন।

           --------------------------------------------

শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৫

Raghabeswar Shib Temple, Dignagar, Nadia

        রাঘবেশ্বর  শিব  মন্দির,  দিগনগর, নদিয়া                     

 শ্যামল  কুমার  ঘোষ


              শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর  রেলপথে  কৃষ্ণনগর  শেষ  স্টেশন।  কলকাতা  থেকে  রেলপথে  দূরত্ব  ৯৯  কি মি।  কৃষ্ণনগর  থেকে  ১১  কি. মি.  দূরে  ৩৪  নং  জাতীয়  সড়কের  পশ্চিম  দিকের  একটি  গ্রাম  দিগনগর।  দিগনগরের  পূর্বের  নাম  ছিল  দীর্ঘিকানগর। 

              নদিয়ারাজ-প্রতিষ্ঠাতা  ভবানন্দ  মজুমদারের  পৌত্র (  কৃষ্ণচন্দ্রের  বৃদ্ধপ্রপিতামহ )  রাজা  রাঘব  রায় ( রাজত্বকাল  ১৬৩২ - ১৬৮৩  খ্রিষ্টাব্দ )  মাটিয়ারী  থেকে  রেউই-এ  ( বর্তমান  কৃষ্ণনগর )  রাজধানী  স্থানান্তরিত  করার  পর,  কৃষ্ণনগর  থেকে   শান্তিপুর  পর্যন্ত  একটি  রাস্তা  তৈরি  করেন  এবং  জনসাধারণের  জলকষ্ট  নিবারণের  জন্য  ২০  হাজার  টাকা  ব্যয়ে  বর্তমান  দিগনগরে  এক  বিশাল  দিঘি  খনন  করেন।  দিঘি  বা  দীর্ঘিকা  থেকে  স্থানের  নাম  হয়  দীর্ঘিকানগর।  দিঘির  পূর্ব  দিকে  রাজা  রাঘব  একটি  সুন্দর  অট্টালিকা  ও  কাছাকাছি  দুটি  মন্দির  নির্মাণ  করেন।  একটি  মন্দির  বর্তমানে  বিধ্বস্ত।  অপরটি  এখনও  মোটামুটি  ভাল  অবস্থায়  আছে।  এটি  নদিয়া  জেলার  টেরাকোটা  মন্দিরগুলির  মধ্যে  অন্যতম।  মন্দিরে   ব্ল্যাক  বেসল্টের  তৈরী  'রাঘবেশ্বর'  শিবলিঙ্গ  নিত্য  পূজিত।  মন্দিরটি  একটি  উঁচু  ভিত্তি  বেদির  উপর  স্থাপিত।  বাংলা  চারচালা  রীতিতে  তৈরী  মন্দিরটিতে  দক্ষিণ,  পূর্ব  ও  পশ্চিম  দিকে  মোট  তিনটি  দরজা।  দরজার  দুপাশে  দুটি  করে  ছোট  ছোট  থাম  এবং  একটি  করে  কারুকার্য  করা  খিলান। 


রাঘবেশ্বর  শিবমন্দির 

              মন্দিরের  পশ্চিমের  দেওয়ালে  বাঁকানো  কার্নিসের  নিচে  শ্লেট  পাথরে  উৎকীর্ণ  প্রতিষ্ঠা-লিপিটি  নিম্নরূপ : 


             
              শ্লোকটির  অর্থ  হল,  ১৫৯১  শকে  ( ১৬৬৯ খ্রীষ্টাব্দে )  পবিত্র  রত্নাকরসদৃশ,  দ্বিজশ্রেষ্ঠ,  ভূমিপালকের  প্রধান  ও  ধীরস্বভাব  শ্রীযুত  রাঘব  স্বচ্ছতরঙ্গমালা  ও  নির্মল  জলের  ধারা  সমুজ্জ্বল  দিঘি  খনন  করে  তার  তীরে  সুরম্য  মন্দিরে  শিবকে  প্রতিষ্ঠা  করেন।  এখানে  সোম = ১,  নব = ৯, ইষু ( বাণ )=৫  এবং  চন্দ্র = ১  ধরে  অঙ্কের  বামাগতি  নিয়মে  প্রতিষ্ঠাকাল  ১৫৯১  শকাব্দ ( ১৬৬৯  খ্রিষ্টাব্দ )।  
              
              এই  মন্দিরে  টেরাকোটা  অলংকরণগুলির  আধিক্য  পশ্চিম  দেওয়ালে  ( উল্লেখ  করা  যেতে  পারে  যে  মন্দিরের  পশ্চিম  দিকে  রাস্তা ), তারপর  দক্ষিণ  দেওয়ালে।  পূর্ব  দিকের  দেওয়ালে  কিছু  ফুল  ছাড়া  অন্য  টেরাকোটা  নেই  এবং  দেওয়ালের  খিলানটিও  বর্তমানে  ভগ্ন।  উত্তর  দিকের  দেওয়াল  পলস্তারা  আবৃত।  ভিত্তিবেদি-সংলগ্ন  দুটি  অনুভূমিক  সারির  নিচের  সারিতে  টেরাকোটায়  জমিদার  বা  রাজার  শিবিকারোহণে  যাত্রা  এবং  সামনে-পিছনে  ঘোড়সওয়ার  ও  লোকলস্কর,  অশ্বারোহী  শিকারী,  খোল-করতাল  সহযোগে  হরিনাম  সংকীর্তন,  হাতির  পিঠে  সওয়ার,  মিথুনদৃশ্য,  গড়গড়ায়  তামাক  সেবন  প্রভৃতি  সমাজচিত্র   উৎকীর্ণ  আছে । উপরের  সারিতে  একটানা  হংস পংক্তির  দৃশ্য।  পশ্চিম  দিকের  প্রবেশ  পথের  খিলানের  ওপরের  চারপাশে  আটচালা  প্রতীক   শিবালয়  ও  তারমধ্যে  শিবলিঙ্গ।  লক্ষণীয়  হল,  দক্ষিণদিকের  দেওয়ালে  দ্বারপথের  খিলানের  ওপরের   চারপাশে   আটচালা  প্রতীক  মন্দিরের  মধ্যে  মাত্র  দুটি  শিবলিঙ্গ  বাকি  সব  মুসলমান  যোদ্ধা।  প্রবেশ  পথের  উপরে  ও  দুপাশে  কুলঙ্গিতে  নিবদ্ধ  দুই  সারি  মূর্তির  মধ্যে  দশাবতার,  কৃষ্ণলীলার  বিভিন্ন  দৃশ্য  যথা  কৃষ্ণরাধিকা, বস্ত্রহরণ,  কালীয়দমন  প্রভৃতিই  প্রধান।  এছাড়া  রাম, বলরাম,  বৃষবাহন  শিব,  প্রহরী,  সৈনিক,  সন্ন্যাসী  প্রভৃতি  মূর্তির  সমারোহ।  একটি  ফলকে  ডানপায়ের  ওপর  বাঁ  পা  রেখে  দণ্ডায়মান  এক  নারীমূর্তি।  তার  পাশে  একটি  হরিণশিশু।  যার  পোশাকি  নাম  'শালভঞ্জিকা'।  এ  মন্দিরে  বিশেষত্ব  হল,  প্রচুর  উৎকৃষ্ট  নকশি  কাজ,  যা  নদিয়ার  খুব  কম  মন্দিরেই  দেখা  যায়।  মন্দিরের  পোড়ামাটির  মূর্তিগুলির  সুক্ষ্ম  কাজ  এই  শতকে  নির্মিত  ভাস্কর্যকলার  বৈশিষ্ট  বহন  করে।  আরেকটি  উল্লেখযোগ্য  হল,  প্রবেশপথের  নিচে  চৌকাঠ  হিসাবে  মোটা  ও  ভারী  কাল  পাথরের  ব্যবহার।  বর্তমানে  মন্দিরটি  পশ্চিমবঙ্গ  সরকার  কর্তৃক  সংরক্ষিত। 

              দিগনগরে  রবীন্দ্রনাথের  দিদি  থাকতেন।  তাঁর  বড়  বোন  সৌদামিনীর  সঙ্গে  এখানকার  যাদবচন্দ্র  গঙ্গোপাধ্যায়ের  পুত্র  সারদাপ্রসাদের  বিবাহ  হয়।  রবীন্দ্রনাথ  এখানে  কয়েকবার  এসেছিলেন।

              দিগনগরে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  লালগোলা  প্যাসেঞ্জার  বা  কৃষ্ণনগর  লোকালে  উঠুন।  নামুন  কৃষ্ণনগরে।  স্টেশন  থেকে  বাসে  বা  রিকশায়  বাসস্ট্যাণ্ডে  পৌঁছান।  সেখান  থেকে  শান্তিপুরগামী  বাসে  পৌঁছে  যান  দিগনগরে।  স্টপেজ  থেকে  পশ্চিম  দিকে  কিছুটা  হাঁটলে  পৌঁছে  যাবেন  মন্দিরে।



রাঘবেশ্বর  শিবমন্দিরের  মাঝের  অংশ 

শিবমন্দিরের  শিখর  দেশ 

পশ্চিম  দিকের  দরজার  খিলানের  উপরের  কাজ

দক্ষিণ  দিকের  দরজা

দক্ষিণ  দিকের  দরজার  খিলানের  উপরের  কাজ 

রাঘবেশ্বর  শিবমন্দিরের  প্রতিষ্ঠাফলক

ভিত্তিবেদি-সংলগ্ন  টেরাকোটায়  সমাজচিত্র - ১

ভিত্তিবেদি-সংলগ্ন  টেরাকোটায়  সমাজচিত্র - ২

ভিত্তিবেদি-সংলগ্ন  টেরাকোটায়  সমাজচিত্র - ৩

ভিত্তিবেদি-সংলগ্ন  টেরাকোটায়  সমাজচিত্র - ৪

মন্দিরের  একদিকের  কোনাচ 

কোনাচের  টেরাকোটার  অলংকরণ 

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ১ 

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ২

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ৩

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ৪

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ৫

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ৬

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ৭

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ৮

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ৯

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ১০

কুলুঙ্গিতে  নিবদ্ধ  টেরাকোটার  অলংকরণ - ১১

রাঘবেশ্বর  শিবলিঙ্গ 


 সহায়ক  গ্রন্থাবলি  :
        ১.  বাংলার  মন্দির  স্থাপত্য  ও  ভাস্কর্য  :  প্রণব  রায় 
        ২.  নদিয়া  জেলার  পুরাকীর্তি মোহিত  রায়  (তথ্য-সংকলন  ও  গ্রন্থনা )

             -------------------------------------------
            আমার  ইমেল :  shyamalfpb@gmail.com   প্রয়োজনে  যোগাযোগ  করতে  পারেন।

           -----------------------------------------